স্বামী বিবেকানন্দের সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

স্বামী বিবেকানন্দের সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বামী বিবেকানন্দের সম্বন্ধে যা বলেছেনঃ

রবীন্দ্রনাথ স্বামী বিবেকানন্দের সম্বন্ধে বিশেষ কোন উক্তি করেননি। কিন্তু যেটুকু সামান্য বলেছেন তাতেই স্বামীজির দেশসেবা ও মানবিকতার প্রতি তার অপরিসীম শ্রদ্ধা সূচিত হয়। তিনি বলেছিলেন—

“যদি ভারতবর্ষকে জানতে চাও তবে বিবেকানন্দকে জানতে হবে।” 

আবার তিনি বলেছিলেন-- “আধুনিক কালের ভারতবর্ষে বিবেকানন্দই একটি মহৎ বাণী প্রচার করেছিলেন, সেটি কোন আচারগত নয়। তিনি দেশের সকলকে ডেকে বলেছিলেন, তােমাদের সকলের মধ্যে ব্রহ্মের শক্তি, দারিদ্র্যের মধ্যে দেবতা তােমাদের সেবা চান। এই কথাটা যুবকদের চিত্তকে সমগ্রভাবে জাগিয়েছে। তাই এই বাণীর ফল দেশের সেবায় আজ বিচিত্রভাবে বিচিত্র ত্যাগে ফলছে। তাঁর বাণী মানুষকে যখনি সম্মান দিয়েছে তখনি শক্তি দিয়েছে। সেই শক্তির পথ কেবল এক-ঝোঁকা নয়, তা কোন দৈহিক প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তির মধ্যে পর্যবসিত নয়, তা মানুষের প্রাণমনকে বিচিত্রভাবে প্রাণবান করেছে। বাংলাদেশের যুবকদের মধ্যে যে সব দুঃসাহসিক অধ্যবসায়ের পরিচয় পাই তার মূলে আছে বিবেকানন্দের সেই বাণী যা মানুষের আত্মাকে ডেকেছে, আঙ্গুলকে নয়। বিবেকানন্দ বলেছিলেন, 

“প্রত্যেক মানুষের মধ্যে ব্রহ্মের শক্তি।” বলেছিলেন, “দরিদ্রের মধ্য দিয়ে নারায়ণ আমাদের সেবা পেতে চান।” 

একে বলি বাণী। এই বাণী স্বার্থবােধের সীমার বাইরে মানুষের আত্মবােধকে অসীম মুক্তির পথ দেখালে। এ তাে কোন বিশেষ আচারের উপদেশ নয়। ব্যবহারিক সংকীর্ণ অনুশাসন নয়। ছুতমার্গের বিরুদ্ধতা এর মধ্যে আপনিই এসে পড়েছে। তার দ্বারা রাষ্ট্রিক স্বাতন্ত্রের সুযােগ হ'তে পারে বলে ভয়, তার দ্বারা মানুষের অপমান দূর হবে বলে। সে অপমানে আমাদের প্রত্যেকের আত্মাবমাননা। বিবেকানন্দের এই বাণী–সম্পূর্ণ মানুষের উদ্বোধন বলেই কর্মের মধ্য দিয়ে, ত্যাগের মধ্য দিয়েই মুক্তির পবিত্র পথে আমাদের যুবকদের প্রবৃত্ত করেছে।”

Post a Comment

0 Comments