কাশীধামে স্বামী বিবেকানন্দ - শ্রী মহেন্দ্রনাথ দত্ত
প্রাগবাণী
১৯২২-২৩ খৃষ্টাব্দের শীতকালে প্রয়াগে অবস্থানকালে ভক্তরাজের (হরিনাথ ওদেদার বা স্বামী সদাশিবানন্দ) সহিত আমার শ্রীমৎ স্বামী বিবেকানন্দ মহারাজজীর সম্বন্ধে নানাবিধ প্রসঙ্গ হইয়াছিল। কথাপ্রসঙ্গে ভক্তরাজ বলিলেন, “স্বামিজী যখন শেষবার কাশীধামে আসিয়াছিলেন তখন আমি স্বামিজীর নিকটে থাকিয়া তাঁহার পরিচর্যা করিয়াছিলাম।” এই কথা শুনিয়া আমি ১৬নং হিউএট রােডস্থ "ব্রহ্মবাদিন ক্লাবে” বসিয়া স্বামিজীর সম্বন্ধে ভক্তরাজকে নানাবিধ প্রশ্ন করিতে লাগিলাম। আমার প্রশ্ন শুনিয়া ভক্তরাজের পূর্বস্থতি অনেক পরিমাণে জাগরিত হইতে লাগিল। ভক্তরাজের মুখ হইতে স্বামিজীর উপাখ্যানগুলি শুনিয়া উপস্থিত সকলে বড় মুগ্ধ হইলেন। কিন্তু পাছে সেইগুলি ভবিষ্যতে নষ্ট হইয়া যায় সেইজন্য উপাখ্যানগুলি লিপিবদ্ধ করিবার জন্য বিশেষ চেষ্টা হইতে লাগিল। ভক্তরাজ তাঁহার সহজ সরল ভাষায় কিছু বলিতেন আর বাকীটুকু হস্তাদি সঞ্চালন, মুখভঙ্গি, কণ্ঠস্বর ও ভাব-বিহবল নেত্ৰদ্ধয় দিয়া প্রকাশ করিতেন। তাঁহার অস্পষ্ট ভাব স্পষ্ট ভাষায় প্রকাশিত হইলে তিনি বিশেষ আনন্দ প্রকাশ করিতেন।উপাখ্যানগুলি বলিতে বলিতে তিনি সহসা এরূপ উচ্চ ভাবে পরিপূর্ণ হইয়া যাইতেন যে আর বলিতে পারিতেন না, ধ্যানমগ্ন হইয়া পড়িতেন। মাঝে মাঝে বলিতেন, “আমি যেন স্বামিজীকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, সেই সমস্ত ঘর-দোর যেন আমার চোখের সামনে ভাসছে দেখছি, তাই আর কিছু বলতে পাচ্ছি না।”
এই সমস্ত উপাখ্যানগুলি, ভক্তরাজের ভাবব্যঞ্জক মুখভঙ্গি ও কণ্ঠস্বর শুনিয়া ঘটনাগুলির পারম্পর্য ঠিক রাখিয়া সেইগুলি আমি ভাষায় বলিয়া যাইতাম আর শ্রীউমেশচন্দ্র সেন লিখিয়া যাইতেন। ভক্তরাজ ও অপর সকলে বসিয়া নিকটে নিতেন এবং তাঁহাদের ভাব যে স্পষ্ট ব্যক্ত হইতেছে, ইহা তাঁহারা অনুমােদন করিতেন। এই সময়ে মহাপুরুষ স্বামী শিবানন্দ মহারাজজী প্রয়াগেতে গিয়াছিলেন এবং তিনিও বিশেষ উৎসাহ ও আগ্রহ প্রকাশ করিয়াছিলেন। তাঁহারই উৎসাহে এই উপাখ্যানগুলি লিপিবদ্ধ হইয়াছে। সেইজন্য মহাপুরুষ শিবানন্দ মহারাজজীর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কবিতেছি। ইতি ----
প্রথম সংস্করণ
কলিকাতা, ২২শে ভাদ্র, ১৩৩২ ।
শ্রীমহেন্দ্রনাথ দত্ত
বইটি অনলাইনে পড়তে ও PDF Download করতে নিচে দেখুনঃ-
*******
======
0 Comments