বিবেকানন্দের জীবন ও বিশ্ববাণী - ঋষি দাস (অনুবাদক)
বিবেকানন্দের জীবন
সূচনা
রামকৃষ্ণের আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকার গ্রহণ করিবার এবং তাঁহার চিন্তার বীজ বিশ্বময় বপন করিবার দায়িত্ব তাঁহার যে মহান শিষ্যের উপর পড়িয়াছিল, তিনি ছিলেন দেহ ও মনের দিক হইতে রামকৃষ্ণের ঠিক বিপরীত।
দিব্যাত্মা রামকৃষ্ণ তাঁহার সমগ্র জীবন জগন্মাতার চরণতলে অতিবাহিত করিয়াছিলেন। আশৈশব তিনি ছিলেন মহাদেবীর নিকট উৎসর্গীকৃত; আত্মচেতনা জন্মিবার আগেই তাঁহার এই চেতনা জন্মিয়াছিল যে, তিনি মহাদেবীকে ভালাে বাসিয়াছেন। মহাদেবীর সহিত পুনর্মিলনের চেষ্টায় তাঁহাকে বহু বৎসর ধরিয়া বহু বেদনা সহ্য করিতে হইয়াছিল। তবে তাহা ছিল মধ্যযুগীয় নাইটদের মতাে সে - বেদনা বহনের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল নিজেকে তাঁহার পবিত্র প্রেমের উপযুক্ত করিয়া তােলা। সকল জটিল দুর্গম অরণ্য-পথের প্রান্তে একাকী সেই মহাদেবীই ছিলেন বর্তমান। বহু রূপের মধ্যে তিনিই ছিলেন একাকী, সেই মহাদেবী—সেই বহুরূপিণী বিধাত্রী। রামকৃষ্ণ যখন তাঁহার নিকট উপস্থিত হইলেন, তখন তিনি অন্যান্য সকল রূপকেও চিনিতে শিখিলেন, এই মহাদেবীর মধ্য দিয়াই তিনি আলিঙ্গন করিলেন সমগ্র বিশ্বকে। বিশ্বানন্দের এই প্রশান্ত পূর্ণতার মধ্যেই তাঁহার অবশিষ্ট জীবন অতিবাহিত হইল। এই বিশ্বানন্দের বন্দনাই বীঠোফেন ও শীলার পাশ্চাত্যের জন্য গাহিয়াছিলেন।
রামকৃষ্ণ কিন্তু এই বিশ্বানন্দকে বীঠোফেন ও শীলারের অপেক্ষা অধিক পরিমাণে উপলব্ধি করিয়াছিলেন। বীঠোফেনের নিকট উহা ছিল বিবদমান বিশৃঙ্খল মেঘমালার অবকাশে নীলাকাশের ক্ষণিক প্রকাশ মাত্র। কিন্তু ভারতীয় রাজহংস পরম হংস ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ দিনগুলির যবনিকা পার হইয়া চিরশাশ্বতের স্বচ্ছ সরােবরে আপনার সুবিশাল শুভ্র পক্ষ বিস্তার করিয়া বিশ্রাম করিতেছিলেন।
বইটি অনলাইনে পড়তে ও PDF Download করতে নিচে দেখুনঃ-
--------
******
0 Comments