নরেন্দ্রনাথ ধ্যান ও মশা
পূজাপাদ গিরিশ্চন্দ্র ঘোষ কথিতঃ-
একদিন সন্ধ্যার পর নরেন্দ্র ও আমি একটা আম-গাছের তলাতে কাশীপুরের 'বাগানে ধ্যান করিতেছি। ধ্যানটা জমিয়া উঠিয়াছে, এমন সময় আমবাগানে কতক-গুলি মশা বড় অন্তরায় হইল। আমি ছু'চার বার হাত চাপড়াইয়া তাড়াইতে লাগিলাম। কিন্তু মশার উৎপাত কমিলনা। প্রাণ বড় জিনিস, আমার ধ্যান বন্ধ হইল, আমি চোখ খুলিয়া এদিক্ ওদিক তাকাইতে লাগিলাম। নরেন্দ্রনাথ সম্মুখে পদ্মাসনে বসিয়া আছে, তাঁহাকে কেমন করিয়া ছাড়িয়া যাই; মৃদুভাবে তাহাকে দু'চার বার ডাকিলাম। কোনও সাড়া পাইলাম না। অবশেষে গাত্র স্পর্শ করিয়া কিঞ্চিৎ দোলাইলাম। কোনও সাড়া শব্দ নাই। গায়ে কম্বলের মত মশা বসিয়া আছে। আমি একটা মশা সহ্য করিতে পারি নাই আর নরেন্দ্র গায়ে অসংখ্য মশা বসিয়া আছে। সাড়া শব্দ নাই। আমার তখন ভয় হইল। এ আবার কি ব্যাপার! আমি ধরিয়া উল্টাইয়া ফেলিয়া দিলাম। নরেন্দ্রনাথ পদ্মাসনে যেমন আসীন ছিলেন তেমনই উল্টাইয়া পড়িলেন। সংজ্ঞা নাই। অনেক কষ্টে নরেন্দ্রনাথের সংজ্ঞা আনাইলাম। তারপর নরেন্দ্রনাথ উঠিয়া হাস্য করিয়া আমাকে বলিলেন,“দূর শালা “জি, সি” অত ভয় খান কেন?”
গ্রন্থসূত্রঃ- শ্রীমৎ বিবেকানন্দ স্বামিজীর জীবনের ঘটনাবলী, শ্রী মহেন্দ্রনাথ দত্ত
0 Comments